কাঁচা হলুদের উপকারিতা(All humanhealth tips),

হলুদের উপকারিতা(Usefulness of Turmeric)

 ১. লিভার টনিকের কাজ করেঃ
লিভারকে কর্মক্ষম এবং সচল রাখতে হলুদের গুরুত্ব অপরিসীম।। কারণ ভিতরে  থাকা কার্কিউমিন নামক উপাদানটি লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।। যে কোনো ধরনের লিভারের রোগ সহজে হতে পারে না। এমনকি ফ্যাটি লিভারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও থাকে না।। এছাড়া হলুদে উপস্থিত বেশ কিছু উপকারি উপাদান লিভারে জমে থাকা বর্জ্য পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে । ফলে লিভারের কোনো ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।।
২. অতিরিক্তি ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ
বিশেষ  কিছু গবেষণায় পাওয়া গেছে নিয়মিত কাঁচা হলুদ খাওয়া খেলে শরীরে বিশেষ কিছু উপাদানের মাত্রা বেড়ে যায়।।যার প্রভাবে হজম ক্ষমতার বিশেষ উন্নতি হয়। যদি কখনো মেটাবলিজম রেট বেড়ে যায়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন হ্রাসের প্রক্রিয়াও ত্বরান্বিত হয়। তবে এখানেই শেষ নয়, হলুদে কার্কিউমিন নামে একটি উপাদান আছে, যার জন্য শরীরে উপস্থিত ফ্যাট সেলদের গলানোর মধ্যে দিয়ে অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে।

৩. ত্বকের সৌন্দর্যে ভূমিকাঃ
নিয়মিত  দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খেলে ত্বকের ভিতরে থাকা টক্সিক উপাদান বেরিয়ে যায়। সেই সাথে কোলাজেনের উৎপাদনও বেড়ে যায়। সেজন্য ত্বক বেশি মাত্রায় উজ্জ্বল এবং প্রাণচ্ছ্বল হয়ে ওঠে।।  সেই সঙ্গে ব্রণ, অ্যাকনে এবং কালো ছোপের মতো সমস্যাও দূর করে থাকে। আসলে  শীতকালেও যদি কেউ ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে চায়, তাহলে তাকে হলুদ দুধ খাওয়া শুরু করতে হবে।  তবে বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে অ্যাকজিমার মতো ত্বকের রোগের চিকিৎসাতেও হলদ মিশানো দুধ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্যঃ
 
শীতকালে আমরা এত অসুস্থ হয়ে পড়ি কেন?  কারণ  আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশ দুর্বল হয়ে পড়ে।সেজন্য নানা রোগ ঘাড়ে চেপে বসে। এজন্য তো এই সময় নিয়মিত হলুদ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। আসলে এই হলুদে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান আছে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেক শক্তিশালী করে তোলে। সেজন্য কোন রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।

৫. হাঁচি-কাশি হওয়ার আশঙ্কা মুক্ত রাখেঃ
হলুদে উপস্থিত অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিজ একদিকে যেমন নানাবিধ সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমায়, তেমনি এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপার্টিজ রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন এবং হাচি কাশি ঠেকাতে বিশেষ অবদান রাখে।  সেজন্য ছোট বাচ্চাদের কে বছরের এই একটা সময়  নিয়মিত হলুদ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।। বিশেষ করে রাতে ঘুমতে যাওয়ার পূর্ব মূহুর্তে।।

৬. পিরিয়ডের সময় কষ্ট কমায়ঃ
মেয়েদের মাসের এই বিশেষ সময়ে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়, যা কোনো কোনো সময় এতটাই কষ্টকর হয় যে সয্যের মাত্রা কমে আসে।। সেই পরিস্থিতিতে যদি অল্প করে হলুদ রস খেয়ে নেওয়া হয়, তাহলে অনেকটাই উপকার পাওয়া যায়। কারণ এই প্রাকৃতিক উপাদানটিতে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান পিরিয়ড সংক্রান্ত কষ্ট কমাতে বেশ ফলপ্রসু কাজ করে থাকে। 

৭. হজম শক্তি বাড়ায়ঃ
অনেক পর্যবেক্ষণ করে পাওয়া গেছে, নিয়মিত হলুদ খাওয়া শুরু করলে হজমে সহায়ক পাঁচক রসের ক্ষরণ অনেক বেড়ে যায়। ফলে বদ-হজমের আশঙ্কা যেমন কমে এবং সেই সঙ্গে গ্যাস-অম্বল এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতো সমস্যা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেজন্য গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ইনফেকশন কমাতে দুধের সাথে হলুদ মেশানো পানীয় বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
৮.  মাথা যন্ত্রণা কমাতে ভূমিকা রাখেঃ
এবার থেকে মাথা যন্ত্রণা হলেই এক কাপ হলুদ মেশানো দুধ খেয়ে নেবেন। দেখবেন কষ্ট কমতে একেবারে সময়ই লাগবে না। কারণ হলুদের অন্দরে থাকা কার্কিউমিন এবং অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি উপাদান শরীরের অন্দরে প্রদাহ কমায় এজন্য মাথা যন্ত্রণা কমতে সময় লাগে না। মাথা যন্ত্রণা ছাড়াও, যে কোনো ধরনের ব্যথা কমাতেই এই হলুদ পানীয়টি বিশেষ ভূমিকা পালন করে । 

৯. রক্তের মধ্যে থাকা বিষ মুক্ত করতে পারেঃ
মানব শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে হলুদ বিশেষ অবদান রয়েছে।। এজন্য এই প্রাকৃতিক উপাদানটির মধ্যে থাকা কার্কিউমিন, রক্তে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানকে বের করে দিতে পারে।।ফলে ব্লাড ভেসেলের কোনো ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না এবং সেই সঙ্গে ক্যান্সার সহ নানাবিধ রোগভোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায়।। 

১০. শরীরের অন্দরে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করেঃ
যখন দেহের অভ্যন্তরে প্রদাহের মাত্রা বেড়ে যায় তখন  শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা কমে যেতে থাকে।। সেই সঙ্গে বাসা বাধে নানান  ধরনের  রোগ। সেজন্য আমাদেরকে অবশ্যই নিয়ম মেনে হলুদ সেবন করতে হবে।। হলুদে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা প্রদাহ কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।।
সবাইকে ধন্যবাদ
লেখক
মোঃহাফিজ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ