অর্জুন বৃক্ষ
অর্জুন বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটি অতি পরিচিত বৃক্ষ।।একটি অর্জুন গাছ থাকা আর একজন ডাক্তার থাকা অনেকেই একই বিষয় বলে থাকেন।গাছটি দেখতে কিছুটা পেয়ারা গাছের মতো। বিভিন্ন অঞ্চলে এই গাছটিকে নাদিসারজ, কুকুভ এবং ধাওয়াল, বলে থাকেন। অর্জুন গাছ চিরহরিৎ বৃক্ষ।এটির বৈজ্ঞানিক নাম হল টার্মিমিনেলিয়া অর্জুনা এবং সংস্কৃত নাম ককুভ। প্রধান ঔষধি গাছের মধ্যে একটি অন্যতম গাছ হল অর্জুন গাছ। এটি মূলত, হৃদরোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অর্জুনের গাছের পাউডার এবং ছাল ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। গাছটির পাতা দেখতে কিছুটা মানুষের জিহ্বাকৃতির মতো হয়। ছাল ধুসর বর্নের এবং খুব মোটা হয়ে থাকে। বিশেষ বৈশিষ্ট গাছ থেকে সহজেই ছাল ওঠানো সম্ভব।।আরো বিস্তারিত জানতেে এখানে ক্লিক করুন
অর্জুন গাছের উপকারিতার কিছু বিশেষ দিক নিচে তুলে ধরা হলোঃ
#১.হৃদয়ের রোগের নিরাময়েঃ
অর্জুন গাছের ছাল হৃদরোগের জন্য খুবই দুরদান্ত কাজ করে,যেমন প্রদাহ,অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, হার্ট ব্লোক,ইত্যাদির মতো হৃদরোগ সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যা দূর করে থাকে। নিয়মিত অর্জুন চুর্ণ পানির সাথে মিশিয়ে খাইতে পারলে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি দূর করে। অর্জুন গাছের চূর্ণ এবং পেঁয়াজ চুর্ণ একই পরিমাণ মিশিয়ে এবং সাথে যদি দুধ মিশিয়ে ১চা-চামচ করে দৈনিক হৃদরোগিকে পান করালে হৃদযন্ত্র খবই শক্তিশালী হয়। তাছাড়া হার্ট ব্লকেজের প্রতিরোধের জন্যও কাজ করে থাকে । যদি খাবার খাওয়ার পর আমরা নিয়মিত সকালে দুই চা-চামচ চূর্ণ ২০০মিলি পানিতে মিশিয়ে খেতে পারি তাহলে অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাবো।
##২.মেহ জনিত সুগার উপশমে কাজ করেঃ
যাদের মধুমেহ রোগ হয়েছে তারা অর্জুন গাছের ছালের চুর্ণ নিয়মিত সেবন করে সমস্যা দূর করতে পারেন। ভালো ফলাফল এর জন্য অর্জুন গাছের ছালের পাউডার এবং জাম বীজের চূর্ণ সমান পরিমাণে মিশিয়ে ঘুমের আগে হালকা গরম জলের সাথে পান করলে দ্রুত আরোগ্য হওয়া যায়। এভাবে সেবন করতে পারলে আপনি মধুমেহ থেকে পরিত্রাণ পাবেন।
##৩.মেদ দূর করতেঃ
বর্তমান সময়ে কারও শরীরে মেদ জমে নাই,এমন মানুষ খুজে পাওয়া খুবই দূরহ ব্যাপার।আমরা আমাদের শশীরে মেদ বৃদ্ধি করে আজকে অনেক রোগের সম্মুখীন।।
আমাদের যাদের শশীরে অতিরিক্ত মেদ নিয়ে সমস্যায় ভোগতেছি,তারা প্রত্যহ সকাল, সন্ধ্যায় অর্জুনে গাছের ছালের চুর্ন পানির সাথে মিশ্রণ করে পান করলে তাঁদের সমস্যা কমে যাবে।নিয়মিত সেবন করলে ফলাফল আপনি নিজেই বুজতে পারবেন।।এটি এত দ্রুত কাজ করে যে ১৫ দিনেই আপনি আপনার মেদের হ্রাসের প্রভাব বুজতে পারবেন।
##৪.কাশির উপশমেঃ
অর্জুন গাছের ছালের চুর্ণের সাথে আদার চুর্ণ সমপরিমাণ মিশিয়ে ১চা-চামচ মধুতে ১চা-চামচ চূর্ণ মিশ্রণ ভালোভাবে মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেতে পারলে কাশি দূর হয়ে যায়। নিয়মিত এভাবেই সেবন করলে চিরদিনের জন্য কাশি থেকে মুক্তি লাভ করা সম্ভব।।
##৫.ত্বকের জন্যঃ
বর্তমান সময়ে মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদের ও ত্বকের সমস্যা হয়ে থাকে।বেশি দেখা যায় ত্বক কুচকে যাওয়া,ভাজ পড়া,বার্ধক্যজনিত অনাকাঙ্খিত ত্বক,এমন সমস্যা হয়েই থাকে।।
তাদের জন্য অর্জুন গাছের ছালের চুর্ণ এর সাথে বাদাম, হলুদ এবং কর্পূর সমান পরিমাণ মিশিয়ে, পিষ্ট করে, ত্বকের উপর প্রয়োগ করলে, মুখের সমস্ত বলিরেখা দূর হয় এবং মুখের ত্বক উজ্জ্বল হয়ে।
##৬.চুল কালো ও উজ্জল করার জন্য অর্জুনের ভূমিকাঃ
চুল সুন্দর ও সাইনিং করার জন্য অর্জুনের ছালের রস অত্যন্ত কার্যকারি অবদান রাখে।
চুলের বৃদ্ধির জন্য ও কাজ করে।। মাথার চুল কালো করার জন্য অর্জুন গাছের ছালের রস এবং হেনার রসেররমিশ্রণ চুলে লাগালে চুল ঘন কালো হয়। তাছাড়া এটা চুল শক্ত ও করে।আসলেই মানব শরীরের জন্য অর্জুনের অবদান অতুলনীয়।।
##৭.প্রস্রাব পরিষ্কারক হিসেবে কাজ করেঃ
অতি পরিচিত সাধারণ বৃক্ষটির যে অসাধারণ কাজ কেউ কল্পনা করে নাই।আসলে এই পৃথিবীতে তুচ্ছ বলে কোন কিছুই নাই।সব কিছুই যেন অতুলনীয়।তেমনি অর্জুন গাছের চুর্ণ তৈরি করে পানিরর সাথে মিশিয়ে সেবন করলে , প্রস্রাবের জ্বালা পোড়া ও বদ্ধ হয়ে সমস্যা দূরীভুত হয়। আবার অর্জুন গাছের ছাল পিষ্ট করে এবং ২৫০ মিলি জলে ফুটিয়ে যখন পানি অর্ধেক হয়ে আসবে, তখন তা ঠান্ডা করে খেয়ে নেন। অবশ্যই প্রস্রাবের সমস্যাজনিত বিষয়গুলো আরোগ্য লাভ হবে।
অর্জুন গাছকে নিজের দৈন্য জীবনের বন্ধু বানিয়ে নেন খুবই উপকার হবে।।
##৮.যেকোন ফোস্কা দূর করতে ভূমিকা রাখেঃ
যে সকল লোকের মুখে ফোস্কা হয়েছে ভালো হচ্ছে না, তারাই অর্জুনের ছালের রস মুখে ব্যবহার করে সুস্থ্য হতে পারেন। অন্য ভাবেও ভাবে ও অর্জুন কে ব্যবহার করতে পারি তাহলো নারকেল তেলের সাথে অর্জুনের ছালের চূর্ণ একত্রিত করে পেষ্ট বানিয়ে লাগাতে পারলে মুখের ফোস্কার উপর প্রলেপ রূপে তাহলে রোগ অবশ্যই নিরাময় হবে।।
এটি জ্বর নিরাময়ে ও কাজ করে থাকে।।
##৯.উচ্চ রক্তচাপ কমাতে অর্জুন ব্যবহার হয়ঃ
বর্তমাসে আমাদের প্রায়ই লোকের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে।এটি কিন্তু খুবই মারাত্নক ব্যাধি, যার কারনে পরবর্তীতে শরীরের বিভিন্ন অংশে সমস্যা হয়।।তাই আমরা যদি
অর্জুন গাছের ছালকে চুর্ণ বানিয়ে প্রতিদিন নিয়ম অনুযায়ী খেতে পারলে তাহলে এসব রোগ মুক্তি পাওয়া যাবে।। এটি ব্যবহারের মাধ্যমে কোলেস্টেরল হ্রাস করে।
##১০. শরীরের প্রদাহজনিত রোগ নিরাময় করে ঃ
প্রদাহজনিত রোগের ক্ষেত্রে অর্জুন বেশ ভালো কাজ করে থাকে।।
অর্জুন গাছের বাকল এসব রোগে ব্যবহার হয়ে থাকে।। প্রতিদিন যদি কেউ ছালে রস বা চুর্ণ সেবন করেন তাহলে ঐ ব্যক্তির প্রদাহজনিত অসুখ আস্তে আস্তে সেরে যাবে।। তাছাড়া প্রায় ১ থেকে ৩ গ্রাম পরিমাণ পাউডার খেলেও প্রদাহ হ্রাস পায় ।।
More Details click here: https://en.wikipedia.org/wiki/Terminalia_arjuna.
0 মন্তব্যসমূহ